বাংলাদেশে কোন ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন বেশি


বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন দেশ। এ দেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক। বহু জনসংখ্যা বিশিষ্ট রাষ্ট্রের নাগরিকের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা যোগান দিতে ও দেশকে উন্নত করতে এদেশের প্রকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তারা শিল্প অবকাঠামো নির্মাণ, যাতায়াত, শিক্ষা, চিকিৎসা, তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে তাদের দক্ষ ও পরিশ্রম দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ দিন দিন উন্নত হচ্ছে ও বিশ্বের মাঝে, দেশ তার পরিচিতি লাভ করছে। কারিগরি শিক্ষায় পারে একটি দেশকে উন্নত করতে। তাইতো দেশেকে উন্নত করতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে।

আরো পড়ুনঃ হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার অপকারিতা

পোষ্ট সুচিপএঃ

বাংলাদেশে কোন ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন বেশি

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকৌশলী বা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন সবচেয়ে বেশি, কেন বেশি চলুন জেনে নিইঃ বাংলাদেশ, দেশটির আয়তনে অনেক ছোট কিন্তু জনসংখ্যা অনেক এই বিশাল জনসংখ্যার মানুষের বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় তাই প্রায়ই বাংলাদেশে লোডশেডিং এ দেখা মেলে, এর কারণ মূলত অতিরিক্ত বিদ্যুতের ব্যবহার এবং সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে না পারা। তাই উক্ত সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশে বিদ্যুৎ প্রকৌশলী তথা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুতের রক্ষণাবেক্ষণ, বৈদ্যুতিক ডিভাইস, পাওয়ার সেকশন, সাবস্টেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের  সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজের সেক্টর গুলো হল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, নেস্কো, ডেসকো, পল্লী বিদ্যুৎ,পাওয়ার প্লান্ট ইত্যাদি সেক্টরে। একজন সরকারি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন নবম ও দশম গ্রেডে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন গ্রামীণফোন, রবি, বাংলা লিঙ্ক, বিভিন্ন নির্মাণাধীন ও বিদ্যুৎ প্রস্তুতকারী সংস্থা তে কাজ করে থাকে। বেসরকারিতে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ৮০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে । তবে উক্ত বেতন গুলি নির্ভর করে তাদের কাজের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা এর উপরে।

বাংলাদেশে কতটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট চালু আছে

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ ও ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য অনেক পথ খোলা আছে। বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলো হল BUET, RUET, KUET, CUET এবং DUET এ সকল সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৭৩+ টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট চালু আছে।

এছাড়াও বাংলাদেশের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় যেমন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী সাইন্স এন্ড টেকনোলজি সহ আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৫০+ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট চালু আছে। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রায় ৫০+ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে ২০০+ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।
 
সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালযয়ে ৭৩+
সাধারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০+ 
বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০+
সব মিলিয়ে হিসাব করলে বাংলাদেশে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট চালু আছে।

আরো পড়ুনঃ পরিবার ছেড়ে ছাএাবাসে থাকার কষ্ট

সেরা ৫ টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট 

সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট রয়েছে যার মধ্যে সেরা পাঁচটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট কোন গুলো চলুন জেনে নিইঃ

এই লিস্টে প্রথম স্থানে আছে
Civil engineering (CT) 
দ্বিতীয় স্থানে আছে 
Electrical and electronics engineering (EEE)
তৃতীয় স্থানে আছে
Mechanical engineering (MT)
চতুর্থ স্থানে আছে
Computer science and technology (CST)

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের মাসিক বেতন কত 

বাংলাদেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এই ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা প্রচুর। বাংলাদেশের প্রথম পাঁচটি সেরা ডিপার্টমেন্টের প্রথম স্থানে আছে এই ডিপার্টমেন্ট।  একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি সেক্টর যেমন সেনাবাহিনী, মিলিটারি, সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপদ বিভাগের  অবকাঠামো উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত থাকেন। বেসরকারি খাতের মধ্যে আছে নির্মাণ প্রকল্প, স্থাপত্য প্রকল্প, বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা ইত্যাদি সেক্টরে কাজ করে থাকেন। এদের মাসিক বেতন কত চলুন যেনে নিইঃ

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন সিভিল  ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন নবম গ্রেডে ৩২ হাজার থেকে শুরু হয়। এটা নির্ভর করে মূলত তাদের যোগ্যতা ও কাজের অভিজ্ঞতা এর উপরে।

ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের মাসিক বেতন কত 

একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার হল এমন একজন ইঞ্জিনিয়ার যিনি সার্কিট ডিজাইন, বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত থাকেন। এছাড়া তারা মোবাইল কম্পিউটার এসি ফ্রিজ মেডিকেলে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির উন্নয়নে কাজ করে থাকেন।প্রতিষ্ঠান ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন। একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের মাসিক বেতন কত 

একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোটর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিন, এসি, রেফ্রিজারেটর, অটোমোবাইল ইত্যাদি যন্ত্রপাতি উৎপাদন নিয়ে কাজ করে থাকে। তাদের কাজ শুধু যন্ত্রাংশ তৈরি করা নয় বিভিন্ন রোবটিক সিস্টেম, টারবাইন, গাড়ির ইঞ্জিন ও কলকারখানার জটিল মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। এক জন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিটিএস, পিডিবি, পিডিসিবি, বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকে।

এছাড়াও বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন সুজুকি, টাটা, হিরো মটরস, এয়ারবাস, আদান এমন অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এদের অনেক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন দক্ষ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার অপকারিতা

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন কত 

একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মূলত সফটওয়্যার, হার্ডওয়ার ডেভেলপমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট, সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদি বিষয়ে ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে থাকেন। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নির্ভর করে তারা কোন সেক্টরের কাজ করছে তার উপর। যেমন  হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন এক রকম, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এদের বেতন এক রকম, আবার সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে যারা কাজ করে তাদের অন্য রকম। চলুন জেনে নেই কাদের বেতন কত টাকাঃ

১.হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ারঃ হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ হল কম্পিউটারের হার্ডওয়ার, মাদারবোর্ড টেস্টিং  করা তাদের বেতন কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ২০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
 
২.সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারঃ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ সফটওয়্যার, এপ্লিকেশন, ওয়েবসাইট তৈরি করা তৈরি করা। একজন নতুন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন ১৫ থেকে ৩০ হাজার দিয়ে শুরু হয়। 

৩.ফাইবার সিকিউরিটিঃ এদের কাজ হল কোন একটি সেক্টরকে হ্যাকিং মুক্ত রেখে তার নিরাপত্তা ঠিক রাখা। সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ২৫ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

আরো পড়ুনঃ আমার নিজের সম্পর্কে

আমাদের শেষ কথা

বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি ইনস্টিটিউট চালু আছে। এই সকল ইনস্টিটিউট গুলোতে তিন শত এর অধীক ডিপার্টমেন্ট চালু আছে। এ সকল ডিপার্টমেন্ট এর ভিতরে সবচেয়ে সেরা পাঁচটি ডিপার্টমেন্ট হল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড প্রটেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ।সুতরাং এ থেকে বোঝা গেল বাংলাদেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন সবচেয়ে বেশি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মনের লিফ্ট ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url